রাজশাহী মৎস্য অধিদফতরের খামারে অনিয়মের অভিযোগ

রাজশাহী মৎস্য অধিদফতরের খামারে অনিয়মের অভিযোগ

রাজশাহী মৎস্য অধিদফতরের খামারে অনিয়মের অভিযোগ
রাজশাহী মৎস্য অধিদফতরের খামারে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মৎস্য অধিদফতরের খামারে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুদে মৎস্য চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না।

মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। এদিকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাজা মাছ সরবরাহের কারণে রাজশাহীর বিশেষ খ্যাতি হিসেবে ইতোমধ্যে মিলেছে ‘লিভিং ফিশ ট্রান্সপোর্টার সিটি’ উপাধি। রাজশাহীর মৎস্য চাষীরা জেলা মৎস্য খামারের উপর নির্ভরশীল। বেসরকারি খামার ও নিজস্ব উদ্যোগে পোনা উৎপাদিত হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। তাই এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে পোনা বিক্রি করে ক্ষুদে মৎস্য চাষিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা।

রাজশাহী নগরীর বর্ণালী মোড়ে মৎস ভবন ক্যাম্পাসের ভেতরেই রয়েছে এই সরকারি মৎস্য খামার। সপ্তাহে একদিন সকাল সাতটা পর্যন্ত পোনা বিক্রি করা হয়। মৎস্য চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদেরকে কোন রশিদ দেয়া হয় না। বাটা মাছের রেণু পোনা প্রতিকেজি ৪ হাজার টাকা ও রুই মাছের রেণু পোনা ৩ হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে। যেখানে সরকারি হিসেবে সব ধরনের মাছের রেণু পোনা ১ হাজার ৭০০ টাকা নেওয়ার কথা। পোনা নিতে আসা আব্দুল্লাহ আল তারিক নামে একজন জানান, সব ধরনের মাছের রেণু পোনার জন্য কেজিতে ৩০০০ টাকা এবং প্রতি ১০০ গ্রাম এর জন্য ৩০০ টাকা ধরা হয়। একই কথা জানান টিকাপাড়া এলাকার সোহেল রানা। তিনি বলেন, বাটা মাছের পোনার জন্য কেজি প্রতি ৪ হাজার টাকা এবং অন্য সব মাছের পোনার জন্য ৩ হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে। শুধু তারিক ও সোহেলই নয়, তাদের মত আরো অনেক মৎস্য চাষিই একই ধরণের অীভযোগ করেন।

এরআগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তৎকালীন খামার ব্যবস্থাপকের অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হলে তাকে বদলি করা হয়। এরপর রাজশাহীর মৎস্য খামারের ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করেন ড. জিনাত আরা। তিনি যোগদানের পর কিছুদিন নিয়মমাফিক কার্যক্রম চলে। এরপর থেকে আবারও সেই আগের মতই খামারটির অনিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

এ ব্যপারে কথা বলতে খামার ব্যবস্থাপক ড. জিনাত আরার সাথে কথা বলতে পর পর তিন দিন অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৎস্য খামারে কর্মরত এক ব্যক্তি জানান, তিনি তার নিজ এলাকার একজন সংসদ সদস্যের বোন হওয়ার সুবাদে দাপট দেখিয়ে আমাদের সাথে প্রায়ই খারাপ আচরণ করেন। আর চুরিদারির বিষয়ে কথা তুললে বলেন, আমাকে কেউ কিছুই করতে পারবে না। তিনি প্রতি সোমবার সকাল ছাড়া বেশীরভাগ সময়ই অফিসে অনিয়মিত। অপর এক কর্মচারী বলেন, অতিরিক্ত টাকা নাকি তিনি একা খান না, মৎস্য ভবনের উর্ধ্বতন সকল কর্মকর্তাকেই দিতে হয়। এছাড়াও মাষ্টার রোল কর্মচারীদেরকে সরকারের দেয়া বেতনের বাইরেও টাকা দিতে হয়। অফিসে না পাওয়ায় তার মুঠোফোনে বারংবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। ফলে তার বক্তব্য পওয়া হয়নি।

এ ব্যপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা বলেন, অনিয়মের বিষয়টি আমার জানা নাই। এখন জানলাম। ঘটনা সত্যি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি স্বীকার করেন, ২০১৯ সালে খামার ব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিকের নামে অনিয়মের অভিযোগও তিনি মিডিয়া কর্মীদের কাছ থেকেই জেনেছিলেন।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply